Travel Permit

পাসপোর্টের অবর্তমানে বাংলাদেশে ফিরে যাবার জন্য হাইকমিশন কর্তৃক জারিকৃত অনুমতিপত্রই হচ্ছে ভ্রমণ অনুমতি বা ট্র্যাভেল পারমিট। এটি কেবল এককালীন ভ্রমণের জন্য প্রযোজ্য; দেশে ফিরে যাবার পর এই ট্র্যাভেল পারমিট ব্যবহার করে আবারো বিদেশে যাবার কোন সুযোগ নেই। কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে হাইকমিশন এই ট্র্যাভেল পারমিট জারি করে থাকে।   

 

তবে দেশে ফিরে যাবার জন্য এটিই চূড়ান্ত দলিল নয়। ট্র্যাভেল পারমিট মূলতঃ দেশ-মুখী একক ভ্রমনের জন্য পাসপোর্টের সমতুল্য। তবে এটি ভিসার সমতুল্য নয়। তাই, হাইকমিশন থেকে এই ট্র্যাভেল পারমিট পাবার পর (ভিসা না থাকার কারনে) যাত্রীকে ভ্রমণকৃত দেশের আইন অনুযায়ী স্থানীয় বহির্গমণ কর্তৃপক্ষ (ডিজি ইমিগ্রেশন এন্ড পাসপোর্টস) থেকে  বহির্গমণ অনুমতি বা এক্সিট পারমিট গ্রহণ করতে হবে।  

 

ট্র্যাভেল পারমিটের প্রয়োজন মূলতঃ দু'টি কারনে হতে পারে। প্রথমতঃ বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা নিয়ে বিদেশ ভ্রমণের সময় কোন যাত্রীর পাসপোর্ট হারানো বা চুরি গেলে তিনি শর্ত সাপেক্ষে নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে নতুন পাসপোর্ট বাংলাদেশের বহিরাগমণ ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর থেকে মুদ্রিত হয় বিধায় বিদেশে এটি পৌছানো সময় সাপেক্ষ বিষয়। তাই জরুরী ভিত্তিতে দেশে ফেরার প্রয়োজনে নতুন পাসপোর্টের পরিবর্তে ট্র্যাভেল পারমিট গ্রহণ করাই সমীচীন। দ্বিতীয়তঃ যে কোন কারনে পাসপোর্ট ও ভিসা ব্যতীত অথবা পাসপোর্ট ও ভিসার মেয়াদ অতিক্রান্ত হবার পর যদি কোন ব্যক্তি তাঁর বিদেশে অবস্থানের বৈধতা হারান এবং অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত হন, তবে তাঁর দেশে ফেরার জন্য ট্র্যাভেল পারমিটের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে অবশ্য ট্র্যাভেল পারমিট জারি করা কিছুটা সময় সাপেক্ষ বিষয়; কেননা এই প্রক্রিয়ার সাথে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্বারা তাঁর বাংলাদেশী নাগরিকত্ব যাচাই-এর বিষয়টি জড়িত।  

 

ট্র্যাভেল পারমিট, পাসপোর্ট, ভিসা অথবা যে কোন কনস্যুলার সেবা দানের জন্য হাইকমিশনের কোন প্রতিনিধি নেই। সেবা-প্রার্থীগণকে  সকল ক্ষেত্রে হাইকমিশনের সাথে সরাসরী  যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।  

 

তবে, করাচীসহ সিন্ধ ও বালোচিস্তান প্রদেশে বসবাসকারী ব্যক্তিগণ ট্র্যাভেল পারমিট, পাসপোর্ট, ভিসা অথবা যে কোন কনস্যুলার সেবার জন্য করাচীতে অবস্থিত বাংলাদেশ উপ-হাই কমিশন-এ আবেদন করবেন।  

 

ট্র্যাভেল পারমিট আবেদন ফর্মঃ

 

ট্র্যাভেল পারমিট আবেদনের জন্য কোন নির্ধারিত ফরমের প্রয়োজন নেই।  সাদা কাগজে আবেদন করতে হবে।

ট্র্যাভেল পারমিট আবেদন প্রক্রিয়াঃ

 

  • এ দেশে আসার কারণ এবং কোণ পরিস্থতিতে ট্র্যাভেল পারমিট-এর প্রয়োজন হয়েছে তা' উল্লেখ করে উপযুক্ত কাগজপত্রসহ সাদা কাগজে লিখিত আবেদনপত্র হাইকমিশনে জমা দিতে হবে।

 

  • বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসায় আগত ব্যক্তির ক্ষেত্রে যথাযথ কাগজপত্র দাখিল সাপেক্ষে হাইকমিশন অনতিবিলম্বে ট্র্যাভেল পারমিট জারি করবে। তবে, বিদেশে অবস্থানের বৈধতা হারানো ব্যক্তির ক্ষেত্রে তাঁর বাংলাদেশী নাগরিকত্ব যাচাইয়ের বিষয়ে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ইতিবাচক প্রতিবেদন প্রাপ্তির পরই হাইকমিশন ট্র্যাভেল পারমিট জারি করতে পারবে।   

 

  • ট্র্যাভেল পারমিট জরির সময়ে স্থানীয় মুদ্রায় নির্ধারিত ফী পাকিস্তানী রুপী ১,০০০/- (এক হাজার) মাত্র জমা দিতে হবে।  এই ফী পরিশোধের সময় হাই কমিশন থেকে রশীদ দেয়া হবে।  রশীদটি ট্র্যাভেল পারমিটের সাথে সংরক্ষণ করার জন্য পরামর্শ দেয়া যাচ্ছে, কেননা বহির্গমণ কর্তৃপক্ষের নিকট এটি প্রদর্শন করার প্রয়োজন হতে পারে। 

 

ট্র্যাভেল পারমিট আবেদনের সাথে দাখিলযোগ্য কাগজপত্রঃ 

 

 

ক। বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসায় আগত সফরকারীর পাসপোর্ট হারানো বা চুরি যাবার ক্ষেত্রেঃ

 

  • সাদা কাগজে লিখিত আবেদনের সাথে ২ (দুই) টি পাসপোর্ট আকারের ছবি;

 

  • পাসপোর্ট হারানো বা চুরি যাবার বিষয়ে স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরির অনুলিপি;

 

  • হারানো বা চুরি যাওয়া পাসপোর্ট-এর ফটোকপি;

 

  • যে ভিসায় তিনি এ দেশে এসেছেন তার ফটোকপি;

 

  • যে টিকিটে তিনি এ দেশে এসেছেন তার ফটোকপি;

 

 

খ। বৈধতা হারিয়ে এদেশে  বসবাস করছেন এমন  ব্যক্তিগণের ক্ষেত্রেঃ

 

  • সাদা কাগজে লিখিত আবেদনের সাথে ২ (দুই) টি পাসপোর্ট আকারের ছবি;

 

  • জন্ম নিবন্ধনপত্র অথবা জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি;

 

  • পিতামাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি;

 

  • বাংলাদেশে স্থায়ী ঠিকানার অধিক্ষেত্রাধীন এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অথবা ওয়ার্ড কাউন্সেলর থেকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব সনদ; 

 

  • এদেশে প্রথমে বৈধভাবে আগামণ করে থাকলে, সেসময়ে ব্যবহৃত পাসপোর্ট, ভিসা ও টিকিটের ফটোকপি;

 

  • বাংলাদেশে নিকটাত্মীয় অথবা আপনজনের ফোন নম্বর সহ পূর্ণ ঠিকানা;